মিথুন আশরাফ – এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আজ ম্যাচ রয়েছে বাংলাদেশের। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ এটি। ম্যাচটি দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রাত ৮ টায় শুরু হবে। ম্যাচটি জিতলে সুপার-৪ এ উঠবে বাংলাদেশ। কিন্তু কোনভাবে হারলেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় ঘন্টা বাজবে।
বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা – দুই দলই আফগানিস্তানের কাছে হেরেছে। দুই দলের ব্যাটিংই বাজে হয়েছে। আফগানিস্তান স্পিনারদের সামনে পড়ে নাজেহাল হয়েছে। এরপর আফগান ব্যাটসম্যানরা ম্যাচ জিতিয়েছেন। তাতে বোঝা যাচ্ছে, ব্যাটিং যে দল ভালো করবে, জয় তাদের হবে। আর বিশেষ করে পরে যারা ব্যাটিং করবে, তাদের জয়ের সম্ভাবনা বেশি থাকবে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ভারতের ম্যাচটিতেও তাই দেখা গেছে। আজকের ম্যাচটিতেও তাই ব্যাটিংয়েই বেশি নজর দিতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ শিবিরের ব্যাটিং লাইনআপ ভালো। কিন্তু আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে ২৮ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে খাদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। নাঈম শেখ, এনামুল হক বিজয়, সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম শুরুতেই আউট হয়ে যান। এরপর আফিফ হোসেন ধ্রুবও বেশিদুর যেতে পারেননি। ২৮ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ৫৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (২৫) চেষ্টা করেন। তবে দলের ৮৯ রানে গিয়ে আউট হন। এরপর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতই (৪৮*) হাল ধরেন। দলকে ১২৭ রানে নিয়ে যান। কিন্তু জয়ের জন্য তা যথেষ্ট ছিল না। তাই ৭ উইকেটে হার হয়। শ্রীলঙ্কারও ৫ রানে ৩ উইকেট পড়ে যায়। এরপর ৪৯ রান পর্যন্ত এগিয়ে গেলেও উইকেট যে পড়তে থাকে ১০৫ রানেই অলআউট হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা।
দুই দলই প্রথম ম্যাচে ভরাডুবি দেখেছে। এখন দুই দলের জন্যই ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ হয়ে গেছে। যে হারবে, তারাই বিদায় নেবে। এমন অবস্থায় নিসাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, আসালাঙ্কা, গুনাথিলাকা, ভানুকা, হাসারাঙ্গা, শানাকা, চামিকারা যেমন ব্যাট হাতে নিজেকে মেলে ধরতে উদগ্রীব। তেমনি বল হাতে মাদুশাঙ্কা, থিকসানা, হাসারাঙ্গা, পাথিরানারা বল হাতে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের রুখে দিতে প্রস্তুত। প্রথম ম্যাচে নাঈম শেখ, বিজয়, সাকিব, মুশফিক নিজেকে মেলে ধরতে না পারলেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কিছু করে দেখাতে চান। আর রিয়াদ, সৈকত, মেহেদি হাসানরা আবারও জৌলুস ছড়াতে চান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বল হাতে ১৫ ওভার দাপট দেখানো সাকিব, মুস্তাফিজ, তাসকিন, মেহেদি, সাইফউদ্দিনরা আজ শ্রীলঙ্কার ইনিংসের পুরোটা সময় ধ্বস নামাতে চান। তা পারা গেলেই এখন হলো। না হলেই বিপদ ঘনিয়ে আসবে।
টি-টোয়েন্টি ফরমেটে এশিয়া কাপ এরআগে একবারই হয়েছে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশের মাটিতে হওয়া টুর্নামেন্টে শ্রীলঙ্কাকে ২৩ রানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ম্যাচটিতে সাব্বির রহমান রুম্মন ৮০ রান করে জিতিয়েছিলেন। আজ সাব্বিরকে তাই খেলানো হতে পারে। নাঈম শেখ, আফিফ হোসেন ধ্রুব অথবা মেহেদি হাসানের মধ্যে যে কোন একজনের স্থানে হয়ত সাব্বিরকে দেখা যেতে পারে।
খেলাটি হবে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। এ স্টেডিয়ামে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার লড়াই হয়। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ন লড়াই হয়। উত্তেজনা ছড়ায়। শেষপর্যন্ত শেষ ওভারে গিয়ে জিতে ভারত। এই স্টেডিয়ামে রান হয় প্রচুর। ব্যাটসম্যানদের উপরই বেশি নজর থাকে। পাকিস্তান ১৪৭ রান করার পরও জিততে পারেনি। তার মানে ব্যাটিংটাই আসল হয়ে ধরা দিতে পারে। দুই দলেই পেস ও স্পিন আক্রমন সমানে সমান বলা চলে। এখন ব্যাটিংয়ে যে দল বাজিমাত করবে, ম্যাচ তাদের হাতেই ধরা দিবে। সেই জয়টি বাংলাদেশেরই হোক, সেই প্রত্যাশাই করা হচ্ছে। আর না জিতলেই বিদায় ঘন্টা বাজবে বাংলাদেশের।