স্পোর্টস রিপোর্টার – সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে এবার এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি খেলতে যায় বাংলাদেশ। প্রথমবার টি-টোয়েন্টি ফরমেটের এশিয়া কাপে সাকিব নেতৃত্ব দেন। প্রথমবারেই নাজেহাল অবস্থা হয়। সবার আগে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের কাছে ৭ উইকেটে হারের পর শ্রীলঙ্কার কাছে ২ উইকেটে হারে বিদায় ঘন্টা বাজে। টুর্নামেন্ট থেকে সবার আগে বিদায় নিয়ে সকাল ৯ টায় দেশে ফিরেছেন সাকিববাহিনী। মিডিয়া এড়িয়ে চলেছেন ক্রিকেটাররা।
নো বল, ক্যাচ মিস, বাজে ফিল্ডিং, সঠিক সময়ে রিভিউ নিতে ব্যর্থ হওয়ার গল্প এবার এশিয়া কাপে দেখা গেছে। তাতে করে হারই নিয়তি হয়েছে। সুপার ফোরে খেলার আশাও পূরণ হলো না। যেখানে এরআগে টানা দুইবার ফাইনালে খেলেছে বাংলাদেশ। আশা ছিল এবার ফাইনালে উঠে হ্যাটট্রিক শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে খেলবে বাংলাদেশ। কিন্তু টুর্নামেন্টের শুরুতেই শেষ হয়ে যায় স্বপ্ন। সাকিব অবশ্য আগেই দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
সাকিব বলেছেন, ‘যে কোনো জায়গায় আমরা (সফরে) যাই, সব জায়গায় এই ধরনের সমর্থন পাই। সমর্থকদের জন্য ‘সরি’ অনুভব করতেই হয়। আমাদের ভালো-মন্দ সবসময় যেভাবে তারা আমাদের সমর্থন জোগানৃ আশা করি তারা এভাবেই আমাদের পাশে থাকবেন। আমরা চেষ্টা করব তাদেরকে কিছু উপহার দিতে।’
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বাংলাদেশের জন্য শুধু যেন দুঃখই উপহার দিচ্ছে। এশিয়া কাপ থেকে এবার যেভাবে বিদায় ঘটল, তা দুঃখজনকই। এশিয়া কাপের আগে সবশেষ ১৫ ম্যাচের ১৩টিতেই হেরেছিল বাংলাদেশ। এর সঙ্গে এবার যুক্ত হলো আরও দুটি। এরপরও উন্নতি দেখছেন সাকিব। বলেছেন, ‘আমরা পুরোপুরি জানি, আমরা কী করছি। আমাদের একটি পরিকল্পনা আছে। দেশে থাকতেও আমি বলেছিলাম, আমাদের একটা লক্ষ্য আছে, আমরা সেদিকেই এগোচ্ছি। ধীরে ধীরে একটা জায়গায় যেতে যেতে চাই। আমরা যদি এই দুই ম্যাচ ধরি, আমার মনে হয়, আমরা যেমন খেলছিলাম আগের তিন-চার সিরিজ, সেখান থেকে অন্তত বড় একটা উন্নতি হয়েছে। এখান থেকে আমরা সামনের দিকে এগোতে পারি বলে আমি মনে করি।’
সাকিব বলেছেন, ‘আমাদের ধারণা, এখানের বাইরে ৫ থেকে ৭ জন খেলোয়াড়ই আছে, যাদের ভেতর থেকে আমরা বিশ্বকাপে দলটা নির্বাচন করতে পারি। সেক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ডে চারটি ম্যাচ খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে। কারণ, কন্ডিশন প্রায় একই থাকবে। ওখানে আমরা আরও ভালোভাবে যাচাই, বাছাই করে বিশ্বকাপে যেতে পারব।’
বাংলাদেশ কোথায় ম্যাচ হেরে যাচ্ছে, ভালো করেই বুঝতে পারছেন সাকিব। তাই সামনের পথে এগোতে ঠিক কোথায় উন্নতি চান, সেটাও অনুধাবন করতে পেরেছে বাংলাদেশ অধিনায়ক। সাকিব তাই বলেছেন, ‘স্কিলের দিক দিয়েও উন্নতির অনেক জায়গা আছে। তবে চাপ এলেই আামরা ভেঙে পড়ি, কিংবা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমরা সব সময় যে হেরে যাচ্ছি, এই জায়গায় আমাদের উন্নতি করা খুব জরুরি। তাহলে দেখা যাচ্ছে, ৫০ শতাংশ ম্যাচও যদি আমরা জিততাম জিতলে কিন্তু আমাদের রেকর্ড ভালো থাকত, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টিতে।’
পেসারদের হুঁশিয়ারও করেছেন সাকিব। বলেছেন, ‘এটা আমাদের জন্য চোখ খুলে দেওয়ার মতো ব্যাপার যে, পেসাররা চাপের সময় কেমন বোলিং করে। এই ধরনের পিচে, পেসারদের ১২ ওভার বোলিং করতে হবে। আমি বলছি না, ১২ ওভার করতেই হবে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৩ পেসারের কাছ থেকে ১২ ওভার প্রত্যাশিত থাকবে। অন্তত ভালো ১০ ওভার প্রত্যাশা করবেন। অন্যান্য দেশগুলো হয়তো ১৪-১৫ ওভার পর্যন্ত প্রত্যাশা করে পেসারদের কাছ থেকে। সেখান থেকে আমরা ১০-১২ ওভার প্রত্যাশা করছি। আর এটা পেস বোলারদের ডেলিভার করতেই হবে। যারা ডেলিভার করতে পারবে, তারা থাকবে। যারা পারবে না, আসলে তারা থাকবে না। খুবই সহজ হিসাব এখানে।’
অধিনায়ক আরও বলেন, ‘আমরা দুই ম্যাচে চার জন বোলারকে এখানে দেখতে পেরেছি। সামনে আরও চারটা ম্যাচ থাকবে। বিশ্বকাপে আশা করি, এমন ৪-৫ জন পেসার পাব, যারা আমাদেরকে ১২-১৪ ওভার দিতে পারবে। অস্ট্রেলিয়ার মতো জায়গায় আমাদের আসলে পেস বোলারদের ওপর অনেক বেশি নির্ভর করতে হবে। আশা করি, বিশ্বকাপ আসতে আসতে আমরা ওরকম বোলার পাব, যারা আমাদের ১২ থেকে ১৩ ওভার প্রতি ম্যাচেই দিতে পারবে।’