মিথুন আশরাফ – প্রথম ওয়ানডের মতো দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও মেহেদি হাসান মিরাজ ব্যাটিং দ্যুতি ছড়ান। এবার তো ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরিই হাকিয়ে ফেলেন। ৮৩ বলে ৮ চার ও ৪ ছক্কায় অপরাজিত ১০০ রান করেন। মিরাজের এ ব্যাটিং ঝলকে বাংলাদেশও ৭ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ২৭১ রান করে। শুধু মিরাজই নন, ম্যাচটিতে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন। ৯৬ বলে ৭ চারে ৭৭ রানের ইনিংস উপহার দেন। মিরাজ ও রিয়াদ মিলে সপ্তম উইকেটে ১৪৮ রানের জুটিও গড়েন। যা কিনা ভারতের বিপক্ষে যে কোন উইকেটে বাংলাদেশের সেরা জুটি। সেঞ্চুরি করে ভারতকে ডোবাচ্ছেনও মিরাজ।
আট নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরি করে ইতিহাস গড়েন মিরাজ। বিশ^ ক্রিকেটে দুইজন ব্যাটসম্যানই আট নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে সেঞ্চুরি হাকিয়েছেন। এরমধ্যে একজন হলেন, আয়ারল্যান্ডের সিমি সিং। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে গতবছর জুলাইয়ে ৯১ বলে অপরাজিত ১০০ রান করেছিলেন। মিরাজ দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে এমন কৃতিত্ব গড়লেন। তবে একদিন দিয়ে মিরাজই এগিয়ে থাকছেন। তিনি যে সিমি সিংয়ের চেয়েও বল কম খেলে সেঞ্চুরি হাকিয়েছেন।
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডের মতো দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও ব্যাটিং ধ্বস নামে। এরপর মিরাজ হাল ধরেন। বুধবার ৬৯ রানেই ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এনামুল হক বিজয় (১১), লিটন কুমার দাস (৭), নাজমুল হোসেন শান্ত (২১), সাকিব আল হাসান (৮), মুশফিকুর রহিম (১২) ও আফিফ হোসেন ধ্রুব (০) আউট হয়ে যান। এরপর রিয়াদের সঙ্গে ব্যাটিংয়ে যোগ দেন মিরাজ। শুরু হয় রান স্কোরে যোগ করা।
ধীরে ধীরে দলকে শতরানে নিয়ে যান দুইজন। ১৫০ রানও করে ফেলে বাংলাদেশ। ২০০ রানও হয়ে যায়। চাপ ভারতের ঘাড়ে দিতে থাকে বাংলাদেশ। কোন চেষ্টা করেও কাজ হয় না। রিয়াদ ও মিরাজ মিলে অসাধারণ ব্যাটিং করতে থাকেন। দুইজনই হাফসেঞ্চুরিও করে ফেলেন। ৫৫ বলে মিরাজ ৫০ রান করে ফেলেন। ৭৪ বলে রিয়াদও ৫০ রান করে ফেলেন। যখন রিয়াদ ৭৭ রান করেন, দলের ২১৭ রান হয়, তখন আউট হয়ে যান রিয়াদ। তখন খেলার ৪ ওভার বাকি থাকে। এই সময় থেকে নাসুম আহমেদ ব্যাট হাতে নেমেই দুটি বাউন্ডারি হাকান। মিরাজও একের পর এক বাউন্ডারি হাকাতে থাকেন। যখন ৮১ রানের বেশি হয়ে যায়, তখন মিরাজ ক্যারিয়ার সেরা ওয়ানডে ব্যাটিং করে ফেলেন। এরআগে এ বছর ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অপরাজিত ৮১ রান করেছিলেন মিরাজ। যা ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে মিরাজের ক্যারিয়ার সেরা ওয়ানডে ব্যাটিং ছিল। শেষে ৫ ওভারেই ৬৮ রান তুলে বাংলাদেশ। রিয়াদ আউটের পর মিরাজ ও নাসুম মিলে শেষ ২৩ বলেই ৫৪ রান স্কোরে যোগ করেন। এরমধ্যে নাসুম ১১ বলে ১৮ রান করেন। আর মিরাজ ১২ বল খেলে ৩৬ রান নেন।
শেষে গিয়ে যখন ইনিংস শেষ হওয়ার ১ বল বাকি থাকে, তখন সেঞ্চুরি হতে মিরাজেরও ১ রান বাকি থাকে। ১ রান নিয়ে সেঞ্চুরি করে ফেলেন মিরাজ। দলেরও ২৭১ রান হয়ে যায়। আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের প্রথম কোন ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি হাকান। অষ্টম উইকেটে ব্যাটিং করতে নেমে এরআগে মিরাজই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৮১ রান করেছিলেন। এবার নিজের রেকর্ডই নিজে ভেঙ্গে ফেলেন। তাতে ভারত ডুবতেও বসেছে।