মিথুন আশরাফ – বাংলাদেশের মাটিতে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার শেষ ম্যাচটির কথা মনে পড়ে? বাংলাদেশ যেন টেস্টে ইংলিশ গাম্ভীর্য চূড়মার করে দিয়েছিল। এলিট শ্রেণীর দলদেরও যে টেস্টে বাংলাদেশ টালমাটাল করে দিতে পারে, সেই প্রমাণ দিয়েছিল। প্রথমবার ইংল্যান্ডকে টেস্টে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। দেখতে দেখতে ৭টি বছর চলে গেল। আবার বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে ইংল্যান্ড এখন বাংলাদেশে। আজ প্রথম ওয়ানডে দিয়ে সিরিজ শুরু হয়ে গেছে।
যদিও এবার আর কোন টেস্ট নেই। তবে আছে ওয়ানডে। সঙ্গে আছে টি-টোয়েন্টি। তিন ওয়ানডে ও তিন টি-টোয়েন্টি সিরিজে লড়াই হবে। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ প্রথম ওয়ানডের পর একই স্টেডিয়ামে শুক্রবার দ্বিতীয় ওয়ানডে হবে। এরপর ৬ মার্চ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে হবে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে। ওয়ানডে সিরিজ শেষে ৯ মার্চ চট্টগ্রামেই হবে প্রথম টি-টোয়েন্টি। চট্টগ্রাম পর্ব এখানেই শেষ। সিরিজের শেষ দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ১২ ও ১৪ মার্চ মিরপুরে অনুষ্ঠিত হবে। ওয়ানডে ম্যাচগুলো দুপুর ১২ টায় ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচগুলো দুপুর ৩ টায় শুরু হবে।
এবার টেস্ট না থাকলেও বাংলাদেশের মাটিতে ওয়ানডে খেলবে ইংল্যান্ড। সবশেষ সিরিজে বাংলাদেশের কাছে একটি ওয়ানডে হেরেছিলও ইংল্যান্ড। বাংলাদেশ আবার দেশের মাটিতে সবশেষ দ্বিপক্ষীয় ৭টি ওয়ানডে সিরিজে হারেনি। সবশেষ ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের কাছেই হেরেছিল। এবার কী আবার তাহলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হার দিয়েই জয়ের ধারায় বিরতি আসবে বাংলাদেশের? নাকি ইংল্যান্ডকেও সিরিজে প্রথমবারের মতো সিরিজে হারিয়ে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ? সেদিকেই সবার নজর থাকছে।
ইংল্যান্ডের সঙ্গে খেলা হলেই বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের ধারায় বিরতি আসে। এরআগেও তা প্রমান হয়েছে। ইংল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজ হারের আগে টানা ৬টি সিরিজ নিজেদের মাটিতে জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর ইংল্যান্ডের কাছে সিরিজে হেরে আবার টানা ৭টি সিরিজ জিতেছে। এবার সিরিজ জিতলে টানা দেশের মাটিতে ৮টি সিরিজ জয় হবে।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ খুব ভালো দল নয়। তা সবারই জানা। আবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা। যে দলটি বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দল। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি-দুই ফরমেটেরই বর্তমান বিশ^চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। গতবছর টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপে বাংলাদেশ তো পাত্তাই পায়নি। তাতে বোঝা যাচ্ছে, টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের জন্য কঠিনই হবে। তবে ওয়ানডেতে বাংলাদেশ এখন শক্তিশালী দল। দেশের মাটিতে তো সিরিজে অপ্রতিদ্বন্দ্বি দলও হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ যখন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবার টেস্ট জিতেছিল, তখন প্রধান কোচ ছিলেন চন্দ্রিকা হাতুরাসিংহে। আবার যখন ইংল্যান্ড খেলতে এসেছে বাংলাদেশে, তখনও হাতুরাসিংহেই কোচ। তিনি জয়ের আশা দেখছেন। সিরিজ শুরুর আগে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে হাতুরাসিংহে বলেছেন, ‘আমার মনে হয় আমরা পূর্ণশক্তির দল, তবে তারা ঠিক পূর্ণশক্তির দল নিয়ে আসেনি। ফলে আমাদের স্কিল ও শক্তিমত্তার ওপর ভরসা রাখছি।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘নিজেদের অবস্থানটা বোঝার জন্য তাদের (ইংল্যান্ডের) বিপক্ষে খেলা আসলেই আমাদের জন্য ভালো একটা সুযোগ। এমন কন্ডিশনে ভালো করলে নিজেদের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়বে।’
ইংল্যান্ড সিরিজের আগে দলকে নিয়ে কাজ করার জন্য এক সপ্তাহের একটু বেশি সময় পেয়েছেন হাথুরুসিংহে। তবে দলকে প্রস্তুতই মনে হচ্ছে তাঁর কাছে, ‘আমরা এ সিরিজের জন্য খুব ভালোভাবেই প্রস্তুত। আমরা চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত। আমরা নিজেদের আত্মবিশ্বাসের ওপরই ভরসা রাখছি। ড্রেসিংরুমে এটি নিয়েই কথা হয়েছে, নিজেদের সেরাটা দেব। এরপর দেখা যাক, কী হয়।’