রবিবার, ১৩ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ফিলিস্তিনের সমর্থন ও ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র

শনিবার (৫ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের সল্ট লেক সিটিতে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেন হাজার হাজার মানুষ। একই দিনে ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্ক এবং অন্যান্য শহরে প্রায় ১,২০০টি বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়, যা একক দিনের ট্রাম্পবিরোধী সবচেয়ে বড় আন্দোলন হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, মেঘাচ্ছন্ন আকাশ এবং হালকা বৃষ্টির মধ্যেও ওয়াশিংটন ডিসির জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভের সামনে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন। এখানে ট্রাম্পবিরোধী বিভিন্ন সংগঠনও যোগ দেয়। বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনের পক্ষেও স্লোগান দেন। তাদের হাতে ফিলিস্তিনি পতাকা এবং গাজায় হামলা বন্ধের দাবিতে প্ল্যাকার্ড ছিল। মিছিল থেকে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে এবং ট্রাম্পের সমর্থনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হয়। গাজাকে বাঁচাতে দাও এমন স্লোগানও ওঠে, এবং গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের নামের তালিকা সম্বলিত বড় একটি ব্যানার দেখা যায়।

এই বিক্ষোভের নাম ছিল ‘হ্যান্ডস অফ’, যা ‘আমাদের নিজেদের মতো চলতে দাও’ এই অর্থে ব্যবহার করা হয়। বিক্ষোভে প্রায় ১৫০টি সংগঠন অংশগ্রহণ করে, যার মধ্যে ‘ইনডিভিজিবল’ গোষ্ঠীও ছিল। এই গোষ্ঠীর সহপ্রতিষ্ঠাতা এজরা লেভিন বলেন, বিশাল এই বিক্ষোভের মাধ্যমে তারা ট্রাম্প, ইলন মাস্ক, রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্যদের এবং তাদের মিত্রদের কাছে স্পষ্ট বার্তা পাঠাতে চান যে, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ মেনে নেয়া হবে না।

ওয়েবসাইট অনুযায়ী, প্রায় ১৫০টি অ্যাকটিভিস্ট গ্রুপ এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে, এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্য ছাড়াও কানাডা ও মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রিন্সটনের অবসরপ্রাপ্ত বায়োমেডিকেল বিজ্ঞানী টেরি ক্লেইন জানান, তিনি ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি, অর্থনৈতিক নীতি এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ করতে এসেছেন, কারণ দেশের সব প্রতিষ্ঠান আজ হুমকির মুখে।

অনেকে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ লেখা পোস্টার ও ইউক্রেনের পতাকা নিয়েও বিক্ষোভে অংশ নেন। বিক্ষোভে মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরাও ট্রাম্পের নীতির সমালোচনা করেন। ৭৩ বছর বয়সী ওয়েইন হফম্যান বলেন, “এই ট্যারিফগুলোর ফলে লাল রাজ্যের কৃষকদের ক্ষতি হবে এবং কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়বে।”

এছাড়া, ৮৪ বছর বয়সী সু-অ্যান ফ্রিডম্যান একটি উজ্জ্বল গোলাপি লেখা পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন এবং বলেন, “মাস্ক ও ট্রাম্পের মতো লোকেরা আমাকে আবার রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে।” ৭৪ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত আইনজীবী পল ক্রেটসম্যান প্রথমবারের মতো বিক্ষোভে অংশ নেন এবং বলেন, “আমার ভয় হচ্ছে, সোশ্যাল সিকিউরিটি ধ্বংস হয়ে যাবে, এবং সরকারের কাঠামো ভেঙে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে, যাতে ট্রাম্প দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে পারে।”

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ