সুনামগঞ্জে মাছ লুট ঠেকাতে বাধা, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াল হাজারো মানুষ

সুনামগঞ্জে মাছ লুটের মচ্ছব চলছে, একটি জলাশয় থেকে মাছ আহরণের সময় পুলিশের বাধার মুখে হাজারো মানুষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশকে ধাওয়া দেয় এবং ব্যাপক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একটি জলাশয় বা সরকারি জলাধার থেকে মাছ ধরার সুযোগ পাওয়াকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সম্প্রতি, স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি মাছ আহরণ করতে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পুলিশের দাবি ছিল, এভাবে মাছ ধরার অনুমতি নেই এবং এটি অবৈধ কার্যক্রমের মধ্যে পড়ে। কিন্তু গ্রামবাসীরা পুলিশের এই নিষেধাজ্ঞা মানতে রাজি হয়নি এবং দ্রুত উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

পুলিশের বাধা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কয়েক শ মানুষ ঘটনাস্থলে জড়ো হয়। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, যখন উত্তেজিত জনতা পুলিশের দিকে এগিয়ে যায় এবং বাধা অগ্রাহ্য করে মাছ ধরতে শুরু করে। ক্রমেই হাজারো মানুষের বিশাল এক দল পুলিশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং তাদের ধাওয়া দেয়। কিছু জায়গায় পুলিশের সঙ্গে জনতার ধস্তাধস্তি ও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, জনতা পুলিশের নির্দেশ উপেক্ষা করে মাছ ধরতে থাকে এবং পুলিশের বাধা দিতে গেলে তাদের দিকে ঢিল ছোড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে, কিন্তু এতে আরও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই পুলিশের কাছ থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়, আবার অনেকে সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশকে ঘেরাও করার চেষ্টা করে।

কয়েকজন পুলিশ সদস্য পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ঘটনাস্থল থেকে সরে যান, তবে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা বলেন, “জনগণের অবৈধভাবে মাছ ধরার বিষয়টি বন্ধ করার জন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল, কিন্তু স্থানীয়রা তা মানতে চায়নি। এ কারণেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।”

পুলিশ জানিয়েছে, তারা জনতাকে শান্ত রাখার জন্য চেষ্টা করছিল, কিন্তু জনতা সহিংস হয়ে ওঠে এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

এই ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কিছু লোক পুলিশের ভূমিকা সমর্থন করলেও, অনেকে বলছেন যে সাধারণ মানুষের জীবিকার স্বার্থে মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া উচিত ছিল।

কিছু গ্রামবাসী অভিযোগ করেছেন যে, জলাশয়ের মাছ আহরণে প্রশাসন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে এবং কিছু নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে সুযোগ দিচ্ছে, যা জনরোষের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ