মিথুন আশরাফ : আর মাত্র এক ঘন্টা বাকি। এরপর বেলা সাড়ে ৪ টায় নেপালের বিপক্ষে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে রাউন্ড রবিন লীগে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। ভুবনেশ্বরের কালিংগা স্টেডিয়ামে হবে এই ম্যাচটি। জিতলেই ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করবে বাংলাদেশ। হারলেও গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ফাইনালে খেলার সুযোগ থাকছে। এমন ম্যাচে দলকে জিতিয়েই ফাইনালে ওঠাতে চান মিরাজুল ইসলাম। মালদ্বীপের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করার পর নেপালের বিপক্ষেও হ্যাটট্রিক করে বাংলাদেশকে ফাইনালে ওঠাতে চান মিরাজুল।
প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গোল করে জেতান। তৃতীয় ম্যাচে মালদ্বীপের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে দলকে ৪-১ গোলে জেতান। মিরাজুল বলেছেন, ‘দেশকে কিছু দিতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। সামনের দিকে আরও এগিয়ে যেতে চাই। সবাই ফাইনালে খেলার অপেক্ষায় আছি। ফাইনালে কিছু করতে পারলে ভালো লাগবে।’ সাথে যোগ করেন, ‘নেপালের বিপক্ষে গোল পেতে চাই। আছে হ্যাটট্রিক করার ইচ্ছাও। আসলে প্রতি ম্যাচে গোল করার চিন্তা করে মাঠে নামি। নেপালের বিপক্ষে যেন জিততে পারি, সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের টেকনিক্যাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক ডিরেক্টর পল স্মলি এ আসরে পালন করছেন কোচের দায়িত্ব। এই অস্ট্রেলিয়ানের হাত ধরে টানা তিন ম্যাচ জিতেছে দল। স্মলিও এখন ছক কষছেন ফাইনাল খেলার। তিনি বলেছেন, ‘মিরাজুল অনেক পরিশ্রম করেছে। মাঠে তার খেলার ধরণ ছিল অনেক ভালো। আমি খুশি তার পারফরম্যান্সে। এছাড়া অন্যরাও ভালো খেলেছে। আমরা ফাইনালে খেলতে চাই। সেভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।’
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ২০ দলের সহঅধিনায়ক মইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ভালো খেলেই ফাইনালে যেতে চাই এবং ফাইনালেও যাতে ভালো খেলতে পারি তার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাচ্ছি।’
এখন পয়েন্ট তালিকায় সবার উপরে আছে বাংলাদেশ। টানা তিনটি ম্যাচ জিতে ৯ পয়েন্ট পেয়েছে। পরের অবস্থানে আছে ভারত। ৩ ম্যাচে ২ জয়ে ৬ পয়েন্ট পেয়েছে। সমান ম্যাচে সমান জয়ে ৬ পয়েন্ট পেয়েছে নেপালও। পাঁচ দলের সাফ অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ আগেই বিদায় নিয়েছে। এখন বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের মধ্যে যে কোন দুটি দল খেলবে ফাইনালে। আগামীকালই তা নিশ্চিত হবে। বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যকার ম্যাচের পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় ভারত ও মালদ্বীপের ম্যাচও আছে। এই ম্যাচ দিয়ে রাউন্ড রবিন লীগ খেলা শেষ হবে। এরপর ফাইনালে ওঠা দুই দলের মধ্যে ৫ আগস্ট শিরোপার লড়াই হবে।
পয়েন্ট তালিকায় বাংলাদেশ ভালো অবস্থায় আছে। এরপর ভারত আছে সুবিধাজনক স্থানে। নেপাল বিপদে পড়ে আছে। গোল ব্যবধানে ভারত (+১১) অনেক এগিয়ে, ১১ গোলে এগিয়ে। সেখানে বাংলাদেশও (+৫) ৫ গোলে এগিয়ে রয়েছে। কিন্তু নেপাল (-১) ১ গোলে পিছিয়ে আছে। তার মানে ভারত আজ মালদ্বীপের সাথে জিতলেই ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করবে। আর বাংলাদেশ যদি হারেও, তাহলেও ফাইনালে খেলার উজ্জ্বল সম্ভাবনা থাকছে। যদি গোল ব্যবধান কোনভাবে ৭-০ না হয়। কারণ, বাংলাদেশ ৫ গোলে এগিয়ে রয়েছে। নেপাল ১ গোলে পিছিয়ে। তাতে করে নেপাল যদি ফাইনালে উঠতে চায়, তাহলে বাংলাদেশকে কম করে হলেও ৭ গোলের ব্যবধানে হারাতে হবে। তখন গিয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ১ গোলের ব্যবধান বেশি থাকবে নেপালের। নেপালের আবার কোন গোলও খাওয়া যাবে না। তার মানে বাংলাদেশের বিপক্ষে নেপাল ০-৬ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকেই নামছে বলা চলে।
টুর্নামেন্টে ফাইনালে ওঠার যে নিয়ম আছে, তাতে শুরুতে পয়েন্ট যার বেশি থাকবে, তারা ফাইনাল খেলবে। পয়েন্ট সমান হলেই সামনে চলে আসবে ‘হেড টু হেড’। আর এখানেই সমস্যা থাকছে। মালদ্বীপের বিপক্ষে ভারত আজ জিতলে ৯ পয়েন্ট হবে। বাংলাদেশের আছে ৯ পয়েন্ট। নেপাল যদি বাংলাদেশকে হারায়, তাহলে হবে ৯ পয়েন্ট। তিন দলের পয়েন্ট সমান হয়ে যাচ্ছে। তখন ‘হেড টু হেড’ সামনে আসবে। সেখানেও সমানে সমান। ভারতকে বাংলাদেশ হারিয়েছে। নেপালকে ভারত হারিয়েছে। আজ যদি বাংলাদেশকে হারায় নেপাল, তাহলে সমানে সমান হলো। তখন আসবে গোল ব্যবধানের হিসেব। আর সেখানে ভারত অনেক এগিয়ে। বাংলাদেশও নেপালের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে আছে। যদি কোন অঘটন না হয়, নেপাল যদি কোনভাবে ৭ গোলের ব্যবধানে বাংলাদেশকে না হারাতে পারে, তাহলে বাংলাদেশ-ভারত যে ফাইনাল খেলা হচ্ছে, তা নিশ্চিতই বলা যায়। তবে নেপালকে হারিয়েই অপরাজিত থেকে ফাইনালে খেলতে চায় বাংলাদেশ।