ভারত চায় পারস্পরিকভাবে লাভজনক সম্পর্ক : প্রণয় ভার্মা

বাংলাদেশের সাথে পারস্পরিকভাবে লাভজনক সম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়ে ভারতের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে এই অংশীদারিত্বে উভয় দেশের জনগণের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।

 

রবিবার সন্ধ্যায় নগরীর একটি হোটেলে ভারতের ৭৬তম প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের সাথে স্থিতিশীল, ইতিবাচক, গঠনমূলক, দূরদর্শী ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক সম্পর্ক চাইবে, যেখানে আমাদের জনগণই হচ্ছে প্রধান অংশীদার।’

 

পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।ভার্মা বলেন, দিল্লি ‘গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ, প্রগতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশকে সমর্থন করে যাবে।

 

তিনি বলেন, ‘আমরা আত্মবিশ্বাসী যে, আমাদের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সম্পর্কের বাস্তবতা এবং আমাদের পারস্পরিক নির্ভরতা ও পারস্পরিক সুবিধার বিষয়টি আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’

 

হাইকমিশনার আরও বলেন, ভারত বিশ্বাস করে যে, দুই দেশের অংশীদারিত্ব উভয় পক্ষের সাধারণ মানুষের জন্য কল্যাণকর হবে এবং তাদের সম্পর্কের মূল ভিত্তি জনগণকেন্দ্রিক।

 

হাইকমিশনার বলেন,‘আমাদের সম্পর্ক সর্বদা জনগণকেন্দ্রিক, সীমান্তের উভয় পাশে পারিবারিক ও সামাজিক সংযোগ দ্বারা সংযুক্ত। সাহিত্য, সঙ্গীত ও শিল্পের প্রতি আমাদের অভিন্ন ভালোবাসা আমাদের সম্পর্ককে সংজ্ঞায়িত করে।’

 

হাইকমিশনার আরও বলেন, ভারত বাংলাদেশের সাথে তার দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ককে মূল্য দেয় এবং বাংলাদেশের জনগণের অব্যাহত যাত্রায় তাদের মঙ্গল কামনা করে।ভার্মা উল্লেখ করেন, ‘প্রতিবেশী হিসেবে আমরা আমাদের সম্পর্কের দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করি। বাংলাদেশের সাথে আমাদের সম্পর্ক আমাদের এই বিশ্বাস থেকে শক্তিশালী হয় যে, আমাদের শান্তি, নিরাপত্তা, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি পরস্পর সংযুক্ত।’

 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত উভয়ই বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের শান্তি ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।তিনি আরও বলেন, ‘পরিবেশগত স্থায়িত্ব ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো অভিন্ন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় আমাদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’


আরও পড়ুন-পাঁচ আগস্টের শক্তির মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে : শিল্প উপদেষ্টা


হাইকমিশনার দুই দেশের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক জোরদার করার কথাও উল্লেখ করে বলেন, বিশেষ করে উন্নত যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততার মাধ্যমে এ সম্পর্ক জনগণ, সমাজ ও ব্যবসাকে আরও কাছে আনছে।ভার্মা বলেন, ‘এই রূপান্তরমূলক পরিবর্তনগুলো এই অঞ্চলের উন্নয়নের সম্ভাবনা উন্মোচিত করেছে, যা একে অপরের উদ্বেগ ও আকাঙ্ক্ষার প্রতি পারস্পরিক সংবেদনশীলতার ফলাফল।’

 

তিনি বলেন, এই পারস্পরিক বোঝাপড়া বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ভবিষ্যত উন্নয়নে নির্দেশনা অব্যাহত রাখবে।ভার্মা বলেন, দুটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী সমাজ হিসেবে, উভয় দেশ সহযোগিতার মাধ্যমে তাদের ভৌগোলিক নৈকট্যকে নতুন সুযোগে রূপান্তরিত করে একে অপরকে এবং বৃহত্তর অঞ্চলকে অনেক কিছু দিতে পারে।ভারতের ঐতিহাসিক যাত্রার কথা স্মরণ করে ভার্মা বলেন, ৭৫ বছর আগে, ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি স্বাধীন ভারতের জনগণ তাদের সংবিধান গ্রহণ করে এবং ভারতকে একটি সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করে।

 

ভার্মা বলেন, ‘এই ৭৬ বছরের অসাধারণ যাত্রায় ভারত দারিদ্র্যের দেশ থেকে একটি সক্ষম আধুনিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত হয়েছে, বিশ্বব্যাপী অগ্রগতিতে ক্রমবর্ধমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং বৈশ্বিক নানা চ্যালেঞ্জের সমাধান প্রদান করছে।’তিনি এই যাত্রায় অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাও স্বীকার করেন যা ইতিহাস, ভূগোল, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগের অভিন্ন বন্ধনে আবদ্ধ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

সর্বশেষঃ