মঙ্গলবার, ২৫শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

অবৈধ সম্পদের মামলায় স্বাস্থ্যের গাড়িচালক মালেকের ১৩ বছরের কারাদণ্ড

অবৈধ সম্পদের মামলায় স্বাস্থ্যের গাড়িচালক মালেকের ১৩ বছরের কারাদণ্ড

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আলোচিত গাড়িচালক আব্দুল মালেককে অবৈধ সম্পদের এক মামলায় দুটি পৃথক ধারায় মোট ১৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

রোববার (২৩ মার্চ) ঢাকার ছয় নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক জাকারিয়া হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কৌঁসুলি আসাদুজ্জামান রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মালেক ও তার স্ত্রী নার্গিস বেগমের বিরুদ্ধে করা আরও একটি অবৈধ সম্পদের মামলার রায় প্রস্তুত না হওয়ায় আদালত তা পিছিয়ে আগামী ১৬ এপ্রিল নির্ধারণ করেছে।

এর আগে, অস্ত্র মামলায় মালেককে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

দুদকের কৌঁসুলি জানান, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আব্দুল মালেককে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

এছাড়া, সম্পদের তথ্য গোপনের দায়ে আরেকটি ধারায় তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে, যা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড হিসেবে যুক্ত হবে।

আদালত মালেকের অবৈধভাবে অর্জিত ১ কোটি ৫০ লাখ ৩১ হাজার ৮১০ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে।

দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে বলে তাকে মোট ১০ বছর কারাগারে থাকতে হবে বলে আদালত আদেশ দিয়েছে।

রায় ঘোষণার সময় মালেককে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয় এবং রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে পুনরায় কারাগারে পাঠানো হয়।

মালেকের আইনজীবী শাহিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দুদক মালেক ও তার স্ত্রী নার্গিস বেগমের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের দুটি মামলা করে। একই দিনে মালেকের বিরুদ্ধে একটি অস্ত্র মামলাও দায়ের করা হয়।

একটি মামলায় শুধু মালেককে আসামি করা হয়, অন্য মামলায় তার স্ত্রী নার্গিস বেগমও অভিযুক্ত।

অভিযোগ অনুযায়ী, মালেক জ্ঞাত আয় বহির্ভূতভাবে ১ কোটি ৫০ লাখ ৩১ হাজার ৮১০ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন এবং ৯৩ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪৮ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।

নার্গিস বেগমের বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়েছে, তার নামে থাকা ২ কোটি ১২ লাখ ৩৫ হাজার ৪৩১ টাকার সম্পদের মধ্যে বৈধ উৎস পাওয়া গেছে ১ কোটি ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩৮২ টাকার, আর বাকি ১ কোটি ১০ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জিত।

২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তুরাগ এলাকা থেকে র‍্যাব মালেককে গ্রেপ্তার করে। ওই দিনই তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা হয়।

অস্ত্র মামলায় ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর আদালত তাকে দুটি ধারায় ১৫ বছর করে মোট ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেন। তবে সাজা একত্রে চলবে বলে তাকে ১৫ বছর কারাগারে থাকতে হবে।

মালেকের গ্রেপ্তারের পর তার বিপুল সম্পদের তথ্য প্রকাশ্যে আসে।

র‍্যাবের তথ্য অনুযায়ী, মালেকের মালিকানায় রয়েছে—

  • তুরাগের দক্ষিণ কামারপাড়ায় দুটি সাততলা ভবন

  • একই এলাকায় একটি বড় ডেইরি ফার্ম

  • ধানমন্ডির হাতিরপুলে সাড়ে ৪ কাঠার জমিতে নির্মাণাধীন ১০তলা ভবন

  • কলাবাগানসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১৫টি ফ্ল্যাট

  • বিভিন্ন ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা

দুদক জানায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত অন্তত ৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, যার মধ্যে মালেকও একজন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ