‘বৈষম্যবিরোধী বা সমন্বয়ক’ পরিচয়ের এখন কোনো অস্তিত্ব নেই : নাহিদ

নাহিদ সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে, ‘বৈষম্যবিরোধী’ বা ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ের আর কোনো অস্তিত্ব নেই। তার মতে, অতীতে যে পরিচয়ে তিনি কাজ করেছেন, তা এখন আর প্রাসঙ্গিক নয় বা কার্যকর অবস্থায় নেই। তিনি এই পরিবর্তনের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেছেন যে, সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলেছে, এবং তার আগের ভূমিকার প্রয়োজনীয়তা এখন আর নেই।

নাহিদের মতে, সমাজের উন্নয়ন ও পরিবর্তনের জন্য নতুন কাঠামো ও উদ্যোগ প্রয়োজন। অতীতে তিনি যে পরিচয়ে পরিচিত ছিলেন, তা নির্দিষ্ট একটি সময় ও প্রেক্ষাপটে কার্যকর ছিল। তবে বর্তমান বাস্তবতায় এটি অকার্যকর হয়ে পড়েছে বলে তিনি মনে করেন। তাই তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তিনি আর এই পরিচয়ে কাজ করছেন না বা এর সঙ্গে তার কোনো সংযোগ নেই।

এ ধরনের পরিবর্তন সামাজিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় যে, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আন্দোলন বা সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা থাকে, এবং সময়ের সঙ্গে সেগুলো বিবর্তিত হয় বা বিলুপ্ত হয়। এক্ষেত্রে নাহিদের ঘোষণাও তেমনই একটি উদাহরণ। তিনি মনে করেন, অতীতে যেসব উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করেছেন, সেগুলোর বাস্তবায়ন এখন ভিন্ন উপায়ে হওয়া উচিত।

তিনি আরও বলেন, তার বর্তমান অবস্থান এবং লক্ষ্য এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন। অতীতের পরিচয়ের চেয়ে তিনি এখন নতুন লক্ষ্য ও কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হতে চান। তার মতে, সামাজিক ন্যায়বিচার, উন্নয়ন এবং পরিবর্তনের জন্য নতুন কাঠামো ও নতুন কর্মপদ্ধতির প্রয়োজন। সেকারণেই তিনি অতীতের পরিচয় থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

তবে, নাহিদের এই বক্তব্য নিয়ে ভিন্নমতও রয়েছে। কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, ‘বৈষম্যবিরোধী’ বা ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় শুধু একটি ব্যক্তিগত বিষয় নয়, বরং এটি একটি বৃহত্তর সামাজিক আন্দোলনের অংশ ছিল। তাই হঠাৎ করে এ ধরনের ঘোষণা অনেকের কাছে বিস্ময়কর মনে হতে পারে। কেউ কেউ মনে করেন, এটি তার নতুন রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে হতে পারে।

সামাজিক আন্দোলনের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব বা পরিচয়ের পরিবর্তন একটি স্বাভাবিক ঘটনা। অনেক সময় ব্যক্তি বিশেষ তার আগের অবস্থান থেকে সরে গিয়ে নতুন ভূমিকা গ্রহণ করেন। ইতিহাসে বহু উদাহরণ রয়েছে যেখানে সামাজিক বা রাজনৈতিক নেতারা এক ধরনের পরিচয় থেকে অন্য ধরনের ভূমিকা গ্রহণ করেছেন।

এ ধরনের পরিবর্তনের পেছনে নানা কারণ থাকতে পারে। অনেক সময় ব্যক্তি তার আগের কর্মকাণ্ড বা অবস্থান থেকে ভিন্ন কিছু করতে চান, কখনও রাজনৈতিক বাস্তবতা বা ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেন। নাহিদের ক্ষেত্রেও হয়তো একই রকম কিছু ঘটেছে।

সামাজিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের পরিবর্তন বা ঘোষণা সামাজিক আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যদি একজন নেতা তার আগের অবস্থান থেকে সরে আসেন, তাহলে তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আন্দোলন বা সংগঠন কীভাবে পরিচালিত হবে, সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়।

নাহিদের এই ঘোষণার পর প্রশ্ন উঠছে যে, ‘বৈষম্যবিরোধী’ বা ‘সমন্বয়ক’ নামে যে আন্দোলন বা কার্যক্রম ছিল, তার ভবিষ্যৎ কী হবে? এটি কি নতুন নেতৃত্বের অধীনে চলতে থাকবে, নাকি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর সময়ই বলে দেবে। তবে এটুকু নিশ্চিত যে, নাহিদের অবস্থান পরিবর্তনের ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে।

সব মিলিয়ে, নাহিদের ঘোষণা শুধুমাত্র একটি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়, বরং এটি সামাজিক আন্দোলনের গতিপথ পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছুই বদলায়, এবং এই পরিবর্তনের প্রভাব সমাজের ওপরও পড়ে। নাহিদের নতুন অবস্থানও হয়তো এমনই একটি পরিবর্তনের অংশ, যা ভবিষ্যতে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ