মিথুন আশরাফ : লজ্জ্বা তো সিরিজ হারেই মিলে গেছে। আজ হারারে স্পোর্টস ক্লাবে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের কাছে হারলে মুখে চুনকালি মাখাও হয়ে যাবে তামিমদের। ২০ বছর ধরে জিম্বাবুয়ের কাছে কোন সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় না বাংলাদেশ। দুপুর সোয়া ১ টায় শুরু হতে যাওয়া ম্যাচে হারলে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হবে বাংলাদেশ। নিজেদের ৪০০তম ওয়ানডে খেলতে নেমে হোয়াইটওয়াশ হলে তামিমদের মুখে চুনকালিই মেখে দেবেন সিকান্দার রাজারা।
সেই ২০০১ সালের পর থেকে অপেক্ষা। বাংলাদেশকে ২০ বছর পরও হোয়াইটওয়াশ করতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। দুই দলের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় কোন সিরিজের ২১ বছরে পাঁ দিয়ে কী সেই অপেক্ষা ফুরিয়ে যাবে জিম্বাবুয়ের? বাংলাদেশকে ২০০১ সালের পর আবার হোয়াইটওয়াশ করবে? যদি তাই হয়, তাহলে সিরিজে হারানোর পর তো তামিম, মুশফিক, রিয়াদদের লজ্জ্বা দেওয়া হয়েই গেছে। বাকি থাকে মুখে চুনকালি মাখানো। বাংলাদেশকে আজ তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে হারালে সেই কাজটিও হয়ে যাবে। তখন তামিমদের মুখে চুলকালি মেখে দেবে সিকান্দার রাজারা। তাই কী হবে?
জিম্বাবুয়ে ২০০১ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ সফরে এসে ওয়ানডেতে ৩-০ ব্যবধানে জিতে। সেই যে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করেছে জিম্বাবুয়ে, সেই থেকে আর কখনোই কোন ফরমেটের ক্রিকেটেই বাংলাদেশকে এই তীক্ত স্বাদ দিতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। ২০১৩ সালের পর তো কোন সিরিজে জিততেই পারেনি জিম্বাবুয়ে। এবার সেই কাজটিও হয়ে গেছে। জিম্বাবুয়ে যে উজ্জ্বীবিত অবস্থায় আছে, তাতে বাংলাদেশ যে হোয়াইটওয়াশও হবে না, তা বলা মুশকিল।
তামিম, মুশফিক, রিয়াদরা এবার ভালোই ফাঁসা ফেসেছেন। জিম্বাবুয়ের কাছে নাস্তানাবুদ হচ্ছেন। টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হার হয়েছে। জিম্বাবুয়ের কাছে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি সিরিজে হেরেছে বাংলাদেশ। ৯ বছর পর ওয়ানডে সিরিজেও হেরেছে। যে জিম্বাবুয়ে বাংলাদেশের কাছে পাত্তাই পায়নি, সেই দলটিই এবার অন্যরূপ দেখাচ্ছে। টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের পরও ওয়ানডে ফরমেট নিয়ে ভালোই আশা ছিল। সেই আশাও হতাশায় রূপ নিয়েছে। দল নিয়েই তো এখন হায় হায় রব উঠছে!
রাজা, ওয়েসলি মাধেভেরে, ইনোসেন্ট কাইয়া, রেগসি চাকাবভারা একেবারে অন্যরূপে হাজির হয়েছেন। নিয়মিত অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন ইনজুরিতে পড়ে খেলছেন না। ইনজুরিতে পড়ে আগেই দল থেকে ছিটকে পড়েছেন দলের সেরা দুই পেসার টেন্ডাই চাতারা ও ব্লেসিং মুজারাবানি। এরপরও পাত্তা পাচ্ছে না বাংলাদেশ। ৩০০ রান করার পরও পাত্তা পাচ্ছে না। ঠিকই ম্যাচ বের করে নিচ্ছেন জিম্বাবুয়ে ব্যাটসম্যানরা। যেখানে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ, সেখানে জিম্বাবুয়ের ৪টি সেঞ্চুরি হয়ে গেছে। প্রথম ওয়ানডেতে রাজা ও কাইয়া সেঞ্চুরি হাকিয়েছেন। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে রাজার সাথে চাকাবভা সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশকে ডুবিয়েছেন। ব্যাটিং, বোলিং কোন বিভাগেই জিম্বাবুয়েকে হারাতে পারছেনা বাংলাদেশ। সাথে ফিল্ডিং ও ক্যাচ মিস তো আছেই। তাতে করে আজও যে বাংলাদেশ হারবেনা, তা কেউই বলতে পারেনা। বরং যে বাজে খেলা হচ্ছে আর জিম্বাবুয়ে যে দুর্দান্ত খেলছে, তাতে প্রথম ও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৫ উইকেটে জেতা জিম্বাবুয়ে আজও বাংলাদেশকে হারিয়ে দিতে পারে, সেই ধারণাই জন্মে গেছে। জিম্বাবুয়ে যদি আজও জিতে যায়, তাহলে সর্বনাশই হয়ে যাবে! ২০ বছর পর বাংলাদেশকে আবার হোয়াইটওয়াশ করার আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাবেন জিম্বাবুইয়ানরা। আর এই আনন্দ ক্ষত হয়ে ধরা দেবে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের গাঁয়ে। আর মুখে তো চুনকালি মাখা হয়েই যাবে।