আর্জেন্টিনা ৪ : ১ ব্রাজিল
ম্যাচের আগে ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার রাফিনিয়া আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে তার দল জয় নিয়ে ফিরবে, এমনকি নিজেও গোল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে বাস্তবতা ভিন্ন ছিল। এস্তাদিও মনুমেন্টালে আর্জেন্টিনার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সামনে ব্রাজিলের খেলোয়াড়দের খুঁজে পাওয়াই ছিল কঠিন।
প্রথমার্ধেই ম্যাচের গল্প অনেকটা পরিষ্কার হয়ে যায়। ২০ মিনিটের মধ্যেই আর্জেন্টিনা দুই গোল করে এগিয়ে যায়। বিরতিতে যাওয়ার সময় স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-১। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামা গুইলিয়ানো সিমিওনে আরও একটি গোল করে ব্রাজিলের কষ্ট বাড়িয়ে দেন।
আর্জেন্টিনার দাপুটে জয়
এই ম্যাচের আগেই বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছিল আর্জেন্টিনা, যা তারা উদযাপন করল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করে। আর্জেন্টিনার হয়ে গোল করেন হুলিয়ান আলভারেজ, অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, এনজো ফার্নান্দেজ ও গুইলিয়ানো সিমিওনে। ব্রাজিলের একমাত্র গোলদাতা ছিলেন ম্যাথিয়াস কুনহা।
ম্যাচের মাত্র ৪ মিনিটের মাথায় ডি পলের পাস ধরে নিকোলাস টালিয়াফিকো বামপ্রান্ত দিয়ে আক্রমণে যান। তার নিখুঁত পাস থিয়েগো আলমাদাকে খুঁজে নেয়, যিনি এক দুর্দান্ত ডিফেন্সচেরা পাসে বল পাঠান আলভারেজের কাছে। দুই ডিফেন্ডারের মাঝখান থেকে সহজেই গোল করেন আলভারেজ।
এরপর ১২ মিনিটেই আর্জেন্টিনা দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায়। অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার বল নিয়ে ব্রাজিলের রক্ষণভাগে ঢুকে পড়েন। তার পাস আলভারেজ হয়ে নাহুল মলিনার কাছে যায়, যার ক্রস থেকে সহজ ফিনিশ করেন এনজো ফার্নান্দেজ।
ব্রাজিলের একমাত্র সান্ত্বনার গোল
৩০ মিনিটের আগেই ব্রাজিল এক গোল শোধ করে। উলভস ফরোয়ার্ড ম্যাথিয়াস কুনহা ক্রিশ্চিয়ান রোমেরোর ভুল কাজে লাগিয়ে বল ছিনিয়ে নেন এবং ঠান্ডা মাথায় ফিনিশিং করেন।
কিন্তু আর্জেন্টিনা তাদের দুই গোলের লিড ফিরে পেতে সময় নেয় মাত্র ১১ মিনিট। কর্নার থেকে ফেরত আসা বলে এনজো ফার্নান্দেজ নিখুঁত এক চিপ দেন, যা ম্যাক অ্যালিস্টার হালকা টোকায় জালে পাঠিয়ে স্কোরলাইন করেন ৩-১।
দ্বিতীয়ার্ধে আরও এক গোল
৪৯ মিনিটে ব্রাজিলের ডিফেন্সের ভুলে আলভারেজ সুযোগ পেলেও গোলরক্ষক বেন্তো দারুণ দক্ষতায় তা রুখে দেন। ৬০ মিনিটে টালিয়াফিকোর হেড অল্পের জন্য বাইরে চলে যায়।
৬৮ মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন গুইলিয়ানো সিমিওনে, এবং মাত্র তিন মিনিটের মাথায় গোল করেন। এনজো ফার্নান্দেজের ফ্রি-কিক থেকে বল টালিয়াফিকোর কাছে যায়, যেখান থেকে পাস পেয়ে ম্যাক অ্যালিস্টার শট নিতে ব্যর্থ হলেও বল সিমিওনের সামনে চলে আসে। তিনি দূরহ কোণ থেকে শট নেন, যা ঠেকানোর কোনো সুযোগ ছিল না ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষকের। স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৪-১।
২০১২ সালে লিওনেল মেসির হ্যাটট্রিক করা ম্যাচের পর এবারই প্রথম ব্রাজিল আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ৪ গোল হজম করল।
শেষ মুহূর্তের চেষ্টায়ও রক্ষা হয়নি ব্রাজিলের
৭৭ মিনিটে রাফিনিয়ার ফ্রি-কিক গোলবার ছুঁয়ে বাইরে চলে যায়। পারেদেসের দূরপাল্লার শটও দক্ষতার সঙ্গে ফেরান বেন্তো। তবে কোনো দলই আর গোল করতে পারেনি, ফলে ৪-১ ব্যবধানে বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা।