বুধবার, ১৯শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে নিহতের সংখ্যা তিন শতাধিক ছাড়িয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে আক্রমণ চালিয়ে পরিস্থিতি আরও সংকটাপন্ন করে তুলেছে। এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং আহত হয়েছেন শতাধিক। গাজা উপত্যকায় এই ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় পুরো বিশ্বে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন এলাকায় বিমান হামলা ও ভূমি আক্রমণ চালাচ্ছে, যার ফলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি হচ্ছে। হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবিরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলি এই হামলাকে গণহত্যার সাথে তুলনা করছে, কারণ এটি বেসামরিক মানুষের উপর অপ্রত্যাশিত আক্রমণ যা আইনত অপরাধ বলে বিবেচিত হয়।

গাজার জনগণের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠেছে, কারণ সীমান্তের নিকটে সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই এবং হামলাগুলি এতো দ্রুত এবং প্রচণ্ড আকারে ঘটছে যে, মানুষ পালানোরও সুযোগ পাচ্ছে না। বহু পরিবার তাদের বাড়িঘর থেকে পালিয়ে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিচ্ছে, কিন্তু সেই শিবিরগুলিও হামলার শিকার হচ্ছে। ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন ভবনে বিমান হামলা চালিয়েছে, যার ফলে বহু সাধারণ মানুষ হতাহত হয়েছেন।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এই সংঘর্ষের তীব্রতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বেশ কয়েকটি দেশ এই হামলার নিন্দা জানিয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। যদিও কিছু দেশ ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য এই হামলাকে সমর্থন করেছে, কিন্তু বেশিরভাগ দেশ এটির বিরোধিতা করেছে এবং ইসরায়েলি আক্রমণের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা গাজার বেসামরিক জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য ইসরায়েলকে আরও শান্তিপূর্ণ এবং নিয়ন্ত্রিত পন্থায় আক্রমণ চালানোর আহ্বান জানিয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে গাজার হাসপাতালগুলোও তীব্র চাপে রয়েছে। চিকিৎসকরা আহতদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাব রয়েছে। অনেক শিশু, মহিলা ও বৃদ্ধ মানুষও আহত হয়েছে। গাজার পরিস্থিতি এমন এক পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে, যেখানে প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলি গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর জন্য ইসরায়েলকে বাধ্য করার চেষ্টা করছে, কিন্তু ওই অঞ্চলের অবরোধ এবং আক্রমণের কারণে এই সহায়তা খুবই সীমিত আকারে পৌঁছাচ্ছে।

এছাড়া, গাজার বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পুরো অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে পানীয় জল ও খাবারের সংকটও বেড়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও দুর্বিষহ করে তুলছে। ইসরায়েলের এই আগ্রাসনে শুধুমাত্র গাজার সাধারণ মানুষই নয়, বরং আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্যও বড় এক বিপদ সৃষ্টি হচ্ছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এবং দেশগুলো এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

এদিকে, গাজায় ইসরায়েলি আক্রমণের পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে হামাস এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি সংগঠনও ইসরায়েলের দিকে রকেট নিক্ষেপ করেছে। যদিও হামাসের আক্রমণ ইসরায়েলি সেনাদের কাছে তেমন কোনো গুরুতর ক্ষতি করতে পারেনি, তবুও এই সহিংসতা ক্রমশই বাড়ছে এবং পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, এই সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা তিন শতাধিক ছাড়িয়ে গেছে এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ একে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে, তবে এখন পর্যন্ত কোনো ফলপ্রসূ আলোচনা শুরু হয়নি। গাজার জনগণের ওপর চলমান এই নির্যাতন এবং সংঘর্ষের সমাপ্তি কবে হবে, তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ