বুধবার, ১৯শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যুতে যা বললেন মার্কিন মুখপাত্র

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ইস্যুতে যা বললেন মার্কিন মুখপাত্র

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাইলে, বিষয়টিকে কূটনৈতিক আলোচনার অংশ বলে উল্লেখ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নবনিযুক্ত মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস। ফক্স নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন ও ব্রুসের প্রতিক্রিয়া
গতকাল সোমবার (১৭ মার্চ) ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করেন।

সাংবাদিক বলেন,
“যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের কিছুদিন আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। বর্তমানে নতুন প্রশাসন ক্ষমতায় এসেছে এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৬০ দিন ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন?”

মার্কিন মুখপাত্রের জবাব
প্রশ্নের উত্তরে ট্যামি ব্রুস বলেন,
“আপনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কথা বলছেন, যিনি তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ঘটনা বিশ্লেষণ করতেন। তবে বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও তার নিজস্ব নীতি অনুসরণ করেন। এই বিষয়ে কূটনৈতিক আলোচনা চলছে, তাই আমি এ নিয়ে কোনো পূর্বানুমান করতে চাই না।”

সাংবাদিক একই প্রশ্ন পুনরায় উত্থাপন করলে ব্রুস বলেন,
“সরকার থেকে সরকার পর্যায়ের কূটনৈতিক আলোচনায় বা নির্দিষ্ট কোনো দেশের ঘটনা নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করা আমার দায়িত্ব নয়।”

মার্কিন গোয়েন্দা প্রধানের উদ্বেগ ও বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া
এদিকে, মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন ও সহিংসতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তবে তার এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

সোমবার এক বিবৃতিতে সরকার জানায়,
“আমরা গভীর উদ্বেগ ও হতাশার সঙ্গে তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য লক্ষ্য করেছি, যেখানে তিনি বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ‘নিপীড়ন ও হত্যা’ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন।”

গ্যাবার্ড আরও বলেন,
“ইসলামপন্থী সন্ত্রাসীদের হুমকি এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কার্যক্রম একই আদর্শ ও লক্ষ্য দ্বারা পরিচালিত হয়— যার উদ্দেশ্য হলো ইসলামপন্থী খিলাফতের মাধ্যমে শাসন কায়েম করা।”

বাংলাদেশ সরকারের কড়া প্রতিক্রিয়া
তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্যকে “বিভ্রান্তিকর ও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণকারী” বলে উল্লেখ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়,
“বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইসলাম চর্চার জন্য সুপরিচিত।”
“চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশ অসাধারণ অগ্রগতি অর্জন করেছে।”
“গ্যাবার্ডের বক্তব্য ভিত্তিহীন এবং নির্দিষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণের ওপর নির্ভর করে দেওয়া হয়নি।”
“বাংলাদেশকে অযথা নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অন্যায় ও অতিরঞ্জিত।”

সংক্ষেপে
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি এবং বিষয়টিকে কূটনৈতিক আলোচনার অংশ হিসেবে দেখছে।
মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বাংলাদেশ সরকার তার বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, এটি বিভ্রান্তিকর ও অতিরঞ্জিত।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ