পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সড়কপথে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে সরকার এবং বিভিন্ন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান নানা উদ্যোগ নিয়েছে। যানজট নিরসন, যাত্রী নিরাপত্তা, টিকিটের বাড়তি দাম রোধ ও কালোবাজারি বন্ধসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ঈদযাত্রা সহজ করতে নতুন সেতু ও সড়ক উন্মুক্ত করেছে সরকার।
যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশ সারাদেশে সমন্বিতভাবে কাজ করবে। ৩ হাজার ৯৯১ কিলোমিটার মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশ ও বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা ১,০১৮টি চেকপোস্ট ও টহল পরিচালনা করবে। ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ ঈদযাত্রাকে বছরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কর্মযজ্ঞ হিসেবে বিবেচনা করছে।
ঈদ উপলক্ষে আগামী ২৫ মার্চ থেকে ‘ঈদ স্পেশাল সার্ভিস’ চালু করবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি)। ইতোমধ্যে ২০ মার্চ থেকে বিআরটিসি’র ডিপো থেকে অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে, যা চলবে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত। যাত্রীদের সুবিধার্থে বাস রিজার্ভের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
সড়কপথে ঈদযাত্রাকে নির্বিঘ্ন করতে হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশ ও ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ সম্মিলিতভাবে কাজ করবে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বাড়তি নিরাপত্তার জন্য জেলা পুলিশও সরাসরি সড়ক-মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করবে। এ ছাড়া যাত্রী চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে ঢাকার প্রধান সড়কগুলোতে ট্রাক চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সারাদেশের ৩ হাজার ৯৯১ কিলোমিটার মহাসড়কে নিরাপত্তা জোরদারে হাইওয়ে পুলিশ ৩৭৭টি চেকপোস্ট পরিচালনা করবে, জেলা পুলিশ বসাবে ১১৪টি চেকপোস্ট এবং ৫২৭টি টহল দল দায়িত্ব পালন করবে।
যানজট নিরসনের লক্ষ্যে সারাদেশে ৬৪টি ‘ব্ল্যাক স্পট’ চিহ্নিত করেছে হাইওয়ে পুলিশ, যেখানে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। যানজট প্রবণ এলাকা বিশেষ করে যেখানে রাস্তা সংস্কার বা বাজারের কারণে যানজট হয়, সেখানে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া সড়কে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।
হাইওয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশের চেকপোস্টগুলো কেন্দ্র থেকে সরাসরি লাইভ ভিডিওর মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হবে। পুলিশের আটটি রেঞ্জের ডিআইজি পর্যবেক্ষণ ও তদারকি করবেন। ইতোমধ্যে এলেঙ্গা, চট্টগ্রাম হাইওয়ে, মহিপাল ও নোয়াখালীসহ বিভিন্ন স্থানে সড়কে ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) খোন্দকার নাজমুল হাসান জানান, ঈদযাত্রা সহজ করতে ঢাকার প্রবেশ ও বাহির হওয়ার পথগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে ঈদের তিন দিন আগে থেকে ট্রাক ও লরি চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। প্রয়োজনে এক টনের পিকআপ ট্রাকগুলোর চলাচলও সীমিত করা হবে।
বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. দেলোয়ার মিঞা বলেছেন, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সারাদেশের মহাসড়কে চেকপোস্ট, টহলসহ অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যানজট নিরসনেও পুলিশ সক্রিয় থাকবে। এবারের ঈদযাত্রা নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে সরকার আশাবাদী।