সোমবার, ১৪ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মানবপাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মানব পাচার দমনে জড়িত অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে সরকার একটি শক্তিশালী আইনি কাঠামো গড়ে তুলেছে এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সক্রিয়ভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।

রবিবার (৬ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত মানব পাচার সংক্রান্ত বিমসটেক সাব-গ্রুপের তৃতীয় বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক ও আইসিটি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং সভার চেয়ারম্যান খন্দকার মোঃ মাহাবুবুর রহমান। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকাস্থ বিমসটেক সেক্রেটারিয়েটের পরিচালক প্রশান্থ চান্দ্রান। এ ছাড়া সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রশাসন ও অর্থ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আতাউর রহমান খান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং মানব পাচার সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে প্রচার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

তিনি জানান, বাংলাদেশ মানব পাচার প্রতিরোধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এ লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, ভুক্তভোগীদের সঠিকভাবে শনাক্তকরণ ও প্রয়োজন অনুযায়ী সহায়তা প্রদান, এবং একটি জাতীয় রেফারেল ব্যবস্থার প্রবর্তন, যা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পরিচালিত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, মানব পাচার মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে এবং জাতীয় কৌশলে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া, বিমসটেকসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে আইনি সহায়তা আরও জোরদার করা হয়েছে।

মানব পাচারকারীরা প্রযুক্তির অপব্যবহার করে এবং অর্থনৈতিক দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন কৌশল গ্রহণ করে পাচার কার্যক্রম পরিচালনা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সমন্বিত পরিকল্পনা ও গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিমসটেক এ ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এই বৈঠকের মাধ্যমে অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলে মানব পাচার প্রতিরোধ কৌশল আরও কার্যকর হবে। তিনি বিমসটেকের আগামী দুই বছরের চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশকে নির্বাচিত করায় সদস্য দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এ সময় তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ভবনিমুখী নেতৃত্বের মাধ্যমে বিমসটেক সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও গভীর হবে।

সভাটি মানব পাচার বিষয়ে আলোচনা, অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং এই সমস্যার সমাধানে বিমসটেক অঞ্চলের অঙ্গীকার পুনঃব্যক্ত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হয়ে উঠেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই বৈঠকের মাধ্যমে শক্তিশালী নীতি প্রণয়ন, তার সঠিক বাস্তবায়ন এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা আরও বাড়বে।

সভায় বিমসটেকের সাত সদস্য দেশ—বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, নেপাল ও ভূটান—এর সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ